বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আগের মতোই আছে। অন্তর্বর্তী সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় দিনমজুর-শ্রমিকদের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ছে। তবে দেশের মানুষকে কষ্টে রেখে উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না। উপদেষ্টারা চাকরিজীবীর মতো কাজ করছেন। তাদের কাজে বিপ্লবের গতিশীলতা নেই।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিপ্লবী সরকারের উপদেষ্টা তো হবেন বিপ্লবী। তাদের চেতনা থাকবে অত্যন্ত গতিশীল। তা না করে বাংলাদেশে কি আর কোনো উপযুক্ত লোক নেই সরকার চালানোর জন্য যে, তাদেরকেই বাছাই করে নিয়ে আসতে হবে। তারা এখন তাদের পছন্দমতো কাজ করছেন, এটা হয় কী করে? গণবিচ্ছিন্ন মানুষ কোনোদিনই জনগণের উপকারে কাজে লাগে না, গণবিচ্ছিন্ন মানুষ কখনোই কল্যাণকামী এবং বিপ্লবী কোনো কাজ করতে পারে না।
গতকাল শুক্রবার বিকালে নয়াপল্টনে গণঅভ্যুত্থানে রিকশাচালকদের হত্যার প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ সমাবেশটির আয়োজন করেন সাধারণ রিকশাচালকরা। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আরিফুর রহমান তুষার প্রমুখ।
রিজভী বলেন, বিদেশে বসে শেখ হাসিনা গুজব ছড়িয়ে দুর্বৃত্তদের উসকানি দিচ্ছে। ক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্যই গত ১৫ বছর পুলিশ দিয়ে হত্যা ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। কারাগারের সালমান এফ রহমান বহাল তবিয়তে রয়েছেন। সেখানে সে খুব তৎপরতা চালাচ্ছে।
রিজভী বলেন, আজকে সালমান এফ রহমান, আজিজ খান আজকে একের পর এক যারা আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। আর সেই কলাগাছ হয়েছে, তারা ন্যায় নৈতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে নয়। তারা হয়েছেন অনৈতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে। শেখ হাসিনা যাদেরকে আনুকূল্য দিয়েছেন তারাই আজকে লুটেপুটে, চেটে টাকা পাচার করে কেউ কেউ বিদেশে অবস্থান করছেন।
রিজভী বলেন, ‘অনেকেই দীর্ঘদিন বঞ্চিত ছিলেন শুধু চাচা, মামা, খালু অথবা ছাত্র জীবনে বিরোধী দলের ছাত্ররাজনীতি করেছেন বলে, যারা ক্যাডার সার্ভিসে এএসপি ছিলেন, তারা এএসপিই থেকে গেছেন। তারা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থাৎ ড. ইউনূস সাহেবের সময় তারা হয়তো প্রমোশন পেয়ে একটা জায়গায় আছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যারা বঞ্চিত ছিল, যাদের প্রমোশন হয়নি, পদোন্নতি হয়নি। তাদের ওপরই বেশি অ্যাটাক করা হচ্ছে। কোনো কোনো উপদেষ্টা এই জিনিসটা করছেন। আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি, ছাত্রজীবনে হয়তো ছাত্রদল করেছে কিন্তু সে তো মেধার জোরে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এসেছে। গত ১৫-১৬ বছরে তাদের কোনো পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। এখন তো তাদের একটি জায়গায় থাকার কথা। কিন্তু চুপচাপ ঘাপটি মেরে থাকা আন্দোলন-সংগ্রামের কোনো স্পিরিটের সঙ্গে যাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি শুনি, তারা সুশীল সমাজের লোক।’